পৃথিবীর ক্রমশ ডিজিটাল বিশ্বায়নের সাথে সাথে বাংলাদেশও ক্রমশ অগ্রসর হচ্ছে । এরই ধারাবাহিকতায় চলছে নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন । আলোচ্য প্রযুক্তি ভাণ্ডারের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল মুঠোফোন (Mobile Phone)। এই মুঠোফোন বিশ্বকে এনে দিয়েছে মানুষের হাতের মুঠোয় । আর এই মুঠোফোন (Mobile Phone) এর একটি অংশ হল Symphony ব্রান্ড। আজ আমরা যেনে নেবো সদ্য বাজারে আসা “Symphony Z40” সম্পর্কে। চলুন শুরু করা যাক……
২০২১ তে বাজারে আসা এই নতুন মডেলটিতে আগের তুলনায় কি কি নতুন সংযোজন করা হয়েছে, কি কি বাদ দেওয়া হয়েছে, প্রসেসর এবং বডি সম্পর্কে, এর সুবিধা ও অসুবিধাসমুহ, আর সর্বোপরী মুঠোফোন (Mobile Phone) কাদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী অর্থাৎ কারা কিনবেন সে সম্পর্কে থাকছে আমাদের নিজেস্ব মতামত। তাহলে চলুন শুরু করা যাক…
সংক্ষিপ্ত বিবরন:
২০২১ সালের মার্চের ১৮ তারিখে বাংলাদেশের বাজারে নতুন লঞ্চ করে “Symphony Z40”। এর দাম নির্ধারন করা হয়েছেঃ-
3GB+32GB | 10,490 টাকা |
চোখ বুজে বলতে পারি মুঠোফোনটিকে প্রথমবার দেখলে দ্বিতীয়বার আবার ফিরে তাকাতে হবে। ১০,৪৯০ টাকা দামে এতটা নজরকাড়া ডিজাইন সত্যিই দুর্লভ। বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বত্রই মুঠোফোন (Mobile Phone) পাওয়া যাচ্ছে।
বিস্তারিত বিবরন:
ডিজাইন ও বডি:
চায়না কোম্পানি সিম্ফনি (Symphony) ২০২১ সালের মার্চের ১৮ তারিখ এ তাদের ব্রান্ড নিউ ফোন Symphony Z40 ঘোষণা করেছিল। এই মডেলটিতে ডিজাইনের দিক দিয়ে কোম্পানি কোন ত্রুটি রাখে নি। সত্যি বলতে ১০,৪৯০ টাকা দামে এতটা প্রিমিয়াম আর নজরকাড়া ডিজাইন খুব কমই দেখা যায়। এর ব্যাক পার্টের ডিজাইনের কারনে মোবাইল ফোনটাকে দেখতে অসাধারন লাগে।
মোবাইলটির দৈর্ঘ্য 165 mm, প্রস্থ 76.6 mm এবং থিকনেস 8.9 mm। যেটা হাতে ধরতে বেশ কম্ফোর্টেবল । এর সামনে গ্লাস এবং বডি প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। এর সামনে অর্থাৎ ডিসপ্লে এর ঠিক উপরে মাঝ বরাবর একটি পাঞ্চ-হোল নচ রয়েছে এবং ফোনটির পিছনে অর্থাৎ ব্যাকপার্টের উপরে বাম পাশে আয়তাক্ৃতির ক্যামেরা বাম্প বসানো হয়েছে যেটা দেখতে বর্তমান সময় খুবই স্বাভাবিক। এর পাওয়ার অন অফ বাটন ও ভলিউম আপ/ডাউন বাটন ডিসপ্লে এর ডান পাশে এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটিকে ব্যাকপার্টের উপরের দিকে সেট করা হয়েছে। যেগুলো আসলেই বেশ সুবিধাজনক স্থানে দেওয়া হয়েছে। ফোনটির নিচের দিকে দেয়া হয়েছে USB Type-C 2.0, 3.5 mm এর অডিও জ্যাক, মাউতস্পিকার (Mic) এবং লাউডস্পিকার। আর ফোনটির উপরে ফ্রন্ট ক্যামেরার উপরে দেয়া হয়েছে ইয়ারস্পিকার
মোবাইলটি বাজারে ৩ টি রঙে পাওয়া যায়। রংগুলি Delightful Green, Dazzling Blue & Jolly Blue।
ডিসপ্লে:
ফোনটিতে রয়েছে ৬.৫৫ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন সমৃদ্ধ 16.7M color সাপোর্টেড ভি-টাইপ নচ যুক্ত ডিসপ্লে । ডিসপ্লেটির 268 এর পিপিআই সহ 720 x 1600 পিক্সেলের রেজোলিউশন রয়েছে যেটা একটি এইচডি প্লাস ডিসপ্লে । ডিসপ্লেটিতে পাবেন স্মুত টাচ রেসপন্স এবং অসাধারন মিডিয়া ভিউএর অভিজ্ঞতা ।
সেন্সর:
ফোনটিতে সেন্সর হিসেবে থাকছে অ্যাক্সিলোমিটার, গাইরো, প্রক্সিমিটি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, জিপিএস ও লাইট সেন্সর। রিয়ার-মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্টটি বেশ নির্ভুল ও দ্রুত কাজ করে। ফেস আনলকও প্রায় সঠিক ও দ্রুত কাজ করে।
নেটওয়ার্ক:
ফোনটিতে রয়েছে একই সাথে ২টা ন্যানো সিম এবং ১টি মাইক্রো এসডি কার্ড ব্যাবহার এর সুবিধা। ফোনটি 3 জি এবং 4 জি নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুবিধা দিবে। তাছাড়া জিপিআরএস এবং ইডিজিই সুবিধাও রয়েছে । এর নেটওয়ার্ক স্পীড হিসেবে থাকছে এইচএসপিএ 42.2/5.76 এমবিপিএস, এলটিই-এ। যেটা এই বাজেটের ফোনের জন্য বেশ সুবিধাজনক।
পারফরমেন্স:
ফোনে অ্যান্ড্রয়েড 10 (Q) কে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে যেটা আপনাকে এক অসাধারন অভিজ্ঞতা দিবে। এর প্রসেসর হিসেবে Octa-core (4×2.3 GHz Cortex-A53 & 4×1.8 GHz Cortex-A53) প্রসেসর ব্যাবহার করা হয়েছে।
র্যাম এবং রম:
সিম্ফনি (Symphony) কোম্পানি ( 3 জিবি / 32 জিবি ) -র ১ টি ভেরিয়েন্টে ফোনটি চালু করেছে। গেমিং, গ্রাফিক্স এবং র্যামের ক্ষেত্রে মোটামুটি ভাল। সাধারণ গ্রাফিক্স গেমগুলি সহজেই চালানো যায়। তবে বর্তমান এর সেরা গ্রাফিক্স গেম গুলো লো-গ্রাফিক্সে খেললে বেশ ভালো পারফরমেন্স আশা করা যায় অন্যথায় ফ্রেমড্রপ, গরম হওয়া, ল্যাগিং বা হ্যাং সহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
ক্যামেরা:
ফোনের পিছনে ত্রিপল ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে যার মেইন ক্যামেরা হিসেবে 13 এমপি f/2.2 এপাচার+ 2 এমপি ওয়াইড সেন্সর+ 5 এমপি ডেপ্ত সেন্সর সেন্সর যুক্ত ক্যামেরা রয়েছে যার সাহায্যে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সর্বোচ্চ 1080p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন । এছাড়া এর সেলফি ক্যামেরা হিসেবে ফ্রন্ট এ রয়েছে 13 এমপি সেলফি ক্যামেরা যার সাহায্যে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সেলফি তুলতে পারেন। আপনি সামনের ক্যামেরা দিয়ে সর্বোচ্চ 1080p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন।
ব্যাটারি:
মোবাইলটিতে নন-রিমুভয়্যবল লিথিয়াম পলিমার এর 5000 এমএএইচ ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। যার সাহায্যে আপনি গড়ে 135 ঘন্টা অবধি স্বাভাবিক ভাবে চালাতে এবং 16 ঘন্টা অনায়াসে নেট ব্রাউজিং করতে পারবেন। পুরো চার্জে, আপনি 3G নেটওয়ার্কে এ প্রায় 39 ঘন্টা পর্যন্ত কথা বলতে পারেন। ফোনটি পুরো চার্জের প্রায় 2.5 ঘন্টা সময় নেবে 10W দ্রুত চার্জিং সাপোর্টে।
অতিরিক্ত ফিচারসমূহ:
- USB Type-C 2.0, OTG
- Digital Wellbeing
- Smart Control
- Google Assistant Key
- One Hand Mode
- Lift to Wake-up
- Notification Light
- Smart Action & Smart Gesture
সিম্ফনি জেড৪০ (Symphony Z40) এর বাংলাদেশী দাম :
বাংলাদেশে এই ফোনটি 3GB+32GB- 10,490 Tk দামে বাজার প্রতিষ্ঠানটি। বাজেট বিবেচনা করে, আমরা আশা করি এটি একটি দুর্দান্ত ফোন হবে।
এবার আসি মূল সুবিধা ও অসুবিধার দিকে…
যে কোন জিনিসের ভাল এবং মন্দ দুইটা দিক থাকে। প্রথমে খারাপ দিকগুলো অর্থাৎ অসুবিধাসমুহ জেনে নেয়া যাক।
অসুবিধাসমুহ:
বডি:
এর বডি প্লাস্টিক এর হওয়ায় এতে সহজে দাগ পড়ে যায় । এজন্য সবসময় ব্যাক কভার ব্যাবহার করুন।
ডিসপ্লে:
এর ডিসপ্লে তে নিম্ন মানের প্রটেক্টিভ গ্লাস দেওয়ায় এর ডিসপ্লে এবং টাচ একটা ঝুকির মধ্যে থাকে ,যেকোনো সময় পড়ে ভেঙ্গে যেতে পারে টাচ ডিসপ্লে । তাই কোনো প্রটেক্টিভ গ্লাস ব্যবহারের অনুরোধ রইল ।
পারফরমেন্স:
বর্তমান এর সেরা গ্রাফিক্স গেম গুলো সাধারন গ্রাফিক্সে খেললে বেশ ভালো পারফরমেন্স আশা করা যায় অন্যথায় ফ্রেমড্রপ, গরম হওয়া, ল্যাগিং বা হ্যাং সহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
সুবিধাসমুহ:
অনেক তো বদনাম শুনলেন এবার ভাল দিকগুলোও জেনে নেওয়া যাক…
ডিজাইন:
এক কথায় অসাধারন। মন জুড়িয়ে যাবার মত ডিজাইন। প্রথমবার তাকালে দ্বিতীয়বার ফিরে তাকানোর মত একটা ডিজাইন।
ডিসপ্লে:
ফোনটিতে রয়েছে ৬.৫৫ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন সমৃদ্ধ 16.7M color সাপোর্টেড ডিসপ্লে । এইচডি প্লাস এবং বড় ডিসপ্লে হওয়ায় ডিসপ্লেটিতে পাবেন অসাধারন এক মিডিয়া ভিউএর অভিজ্ঞতা ।
সাউন্ড:
ফোনটির নিচের দিকে দেয়া হয়েছে ৩.৪ এর অডিও জ্যাক, মাউতস্পিকার (Mic) এবং লাউডস্পিকার। আর ফোনটির উপরে ফ্রন্ট ক্যামেরার উপরে দেয়া হয়েছে ইয়ারস্পিকার, যে গুলোর সাউন্ড কোয়ালিটি সত্যিই প্রশংসনীয় ।
স্টোরেজঃ
এতে থাকছে ১২৮ জিবি পর্যন্ত অতিরিক্ত স্টোরেজ বা মেমোরি কার্ড ব্যাবহারের সুবিধা।
ব্যাটারি:
মোবাইলটিতে নন-রিমুভয়্যবল লিথিয়াম পলিমার এর 5000 এমএএইচ এর বড় ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। যার সাহায্যে আপনি গড়ে 135 ঘন্টা অবধি স্বাভাবিক ভাবে চালাতে এবং 16 ঘন্টা নেট ব্রাউজিং করতে পারবেন। পুরো চার্জে, আপনি 3G নেটওয়ার্কে এ প্রায় 39 ঘন্টা পর্যন্ত কথা বলতে পারেন।
যাদের জন্য এই ফোনটি:
যারা সাধারণ কোন কাজের জন্য বা মিডিয়া ভিউয়ের জন্য বা ইন্টারনেট ব্রাউজিং অথবা, যারা সামান্য গেম খেলার জন্য ফোন কিনতে চাচ্ছেন তাদের জন্য বেস্ট ফোনগুলোর মধ্যে “সিম্ফনি জেড৪০ (Symphony Z40)” একটি । এছাড়া নরমাল গ্রাফিক্স এর গেমিং সুবিধাও থাকছে।
সিম্ফনি জেড ৪০ এর বক্সে যা যা থাকছে :
আমার নিজেস্ব মতামত:
আমার মনে হয় এতে যে প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে সেটি অনেক ভাল মানের। সব দিক বিবেচনা করে আপনি যদি সাধারণ ব্যাবহারকারী এবং মিডিয়া প্রেমি হন আর দামটা যদি খুব একটা ম্যাটার না করে তবে নিঃসন্দেহে হতে পারে এই মোবাইলটি আপনার পছন্দের শীর্ষে থাকা একটি মোবাইল।
দীর্ঘদিন ধরে সিম্ফনি (Symphony), মোবাইল প্রেমীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা একটি নাম। ব্যক্তিগতভাবে সিম্ফনি নাম শুনলে আমার মাঝেও একটা দুর্বলতা কাজ করে। যেহেতু আগেও সিম্ফনির বেশ কয়েকটা মডেল বাজারে এসে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে সেই ধারাবাহিকতায় এই মোবাইলটিও সকল মোবাইল ব্যাবহারকারীদের মন জয় করে তাদের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পরবে।
BDPrice.com.bd পরিবারের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমাদের ফেসবুক পেজ BD Price।
Beautiful mobile
Good product
Nice
nice
ok
Very nice
nove
Good on
Awesome
Wow
Nice product
Nice 👍
Nice
Average phone
Nice
Good
Nice